মঙ্গলবার, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

শাবে ইয়ালদা : প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর সোনালী রাত

পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২০, ২০২০ 

news-image

বছরের দীর্ঘতম রাত ‘শাবে ইয়ালদা’। ইরানি পরিবার ও বন্ধুদের একত্র হয়ে মূল্যবান সময় কাটানোর একটি সোনালি রাত। এদিন সবাই মিলে ধুমধাম করে বছরের দীর্ঘতম রাত উদযাপন করা হয়। প্রতিবছর ২১ই ডিসেম্বর ইরানে রাতটি উদযাপিত হয়। ‘শাবে ইয়ালদা’ ঘিরে ইরানে রয়েছে বেশ কিছু ঐতিহ্য। শীতের দীর্ঘতম এই রাতে পরিবারগুলো একত্রিত হয়ে কবিতা এবং উৎসবে মেতে ওঠে। সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী তরতাজা ফলমূলের সমাহার তো রয়েছেই।

করুণাময় এই রাতে ইরানিদের কাছে শীতকালীন শীতলতা যেন পরাজিত হয়। ভালোবাসার উষ্ণতা পুরো পরিবারকে আলিঙ্গন করে। আত্মাগুলো একে অপরের আরও বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে ভালোবাসা বিনিময়ে মেতে ওঠে।

২১ই ডিসেম্বরের এই রাতে বিদেশে বসবাসরত ইরানিদের জন্য রয়েছে চমতকার কিছু সুযোগ। তারা এদিন বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির মানুষদের কাছে নিজেদের অসাধারণ ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পারেন। প্রথা ও রীতিনীতি ভাগাভাগি করার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ পান। যা আন্তঃসংযুক্তির এই বিশ্বে পারস্পরিক উত্তম বোঝাপড়ার পথ প্রশস্ত করে।

ইরানের ব্যস্ততম রাস্তায় উঁকি দিলে দেখা যায় মুদি ও কনফেকশনারি দোকানগুলো যেন মহাউৎসবে মেতে উঠেছে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রয়োজনীয় খাবার-দাবার কিনে মজা উপভোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রাতে উষ্ণ খাবার শেষে অনেকে কবিতা, গল্প ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে অসাধারণ মুহূর্ত কাটান। মধ্যরাত পর্যন্ত এই উৎসব চলতে থাকে।

শব-ই ইয়ালদার ভোজ ‘শব-ই চেল্লেহ’ নামেও পরিচিত। আক্ষরিক ভাবে যার অর্থ চল্লিশের রাত। অর্থাৎ ‘শব-ই চেল্লেহ’ বলতে শীতকালের প্রথম চল্লিশ দিনকে বোঝায়। শীতের এই দিনগুলো সাধারণত সবচেয়ে শীতলতম ও কঠিন হয়ে থাকে।

প্রাচীন ইরানি ক্যালেন্ডারে শীতকাল দুভাগে বিভক্ত। ‘চেল্লেহ বোজোরগ’ ২২ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। যার আক্ষরিক অর্থ বড় চল্লিশ। আর ‘চেল্লেহ কুচাক’ ৩০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১০ মার্চ পর্যন্ত। যার অর্থ ছোট চল্লিশ।

ইয়ালদা রাতে মূলত শীতের সূচনা উদযাপন করা হয়। একই সাথে দিন বাড়তে থাকায় সূর্যের আধিপত্য বিস্তার হতে থাকে। ইয়ালদা শব্দের অর্থ সূচনা বা জন্ম। সিরিয়াক থেকে শব্দটি ফারসি ভাষায় এসেছে। ইয়ালদা সরকারি কোনো ছুটির দিন না হলেও এখনও প্রাচীন কিছু ঐতিহ্যকে ছাপিয়ে যায় উৎসবটি। এই রাতে টেলিভিশনে বিশেষ প্রোগ্রাম সম্প্রচার করা হয়। সূত্র: তেহরান টাইমস।