‘মধ্যপ্রাচ্য সংকটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা’
পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ২২, ২০১৫

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিষয়ক এক সেমিনারে ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উগ্র সন্ত্রাসবাদের বিস্তার এবং তাদের সহিংস আচরণ ও ভ্রান্ত চিন্তাভাবনা নজিরবিহীনভাবে নারী অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছে। গোলাম হোসেন দেহকানি আরো বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য সংকট নতুন দিকে মোড় নিয়েছে এবং এর ফলে এ অঞ্চলের এক বিরাট অংশ জুড়ে নারীরা মারাত্মক জুলুম নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বে এ পর্যন্ত যত যুদ্ধ হয়েছে তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতে নারীরা সবচেয়ে বেশি নিগ্রহের শিকার হচ্ছে। যুদ্ধ ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়ায় সরাসরি বেসামরিক মানুষজন বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তাদের না আছে কোনো আশ্রয় না আছে নিরাপত্তা।
গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এ অঞ্চলে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটিয়ে যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে। উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, যুবক সবার রক্তই হালাল বলে মনে করে। উগ্র তাকফিরিরা সামান্য লেখাপড়া জানা মুফতিদের নির্দেশ মতো চলছে। তারা অমানবিকভাবে পরিকল্পিত উপায়ে নারীদের সঙ্গে এমন সব সহিংস আচরণ করছে যা সারা বিশ্বের মানুষকে বিস্মিত করেছে।
সিরিয়ায় প্রতি শহর ও গ্রামে যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং সন্ত্রাসীরা এ পর্যন্ত বহু নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে। বিশেষ করে তাকফিরি সন্ত্রাসীরা সিরিয়ার বন্দী নারীদের সঙ্গে অত্যন্ত অমানবিক আচরণের পাশাপাশি তাদেরকে বিয়ে করতে বাধ্য করছে। গলায় চেন দিয়ে বেধে নরীদেরকে বিভিন্ন দামে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
গত দুই বছরে ইরাকেও তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশ তাদের দখলীকৃত এলাকায় বহু নারী ও পুরুষকে অপহরণ ও হত্যা করেছে। ইরাকের নারীদেরকে তারা যৌন দাসী হিসেবে বিক্রি। এ সব ঘটনা থেকে নারীদের বিরুদ্ধে আইএসআইএল সন্ত্রাসীদের সহিংস আচরণের বিষয়টি ফুটে ওঠে।
ইয়েমেনেও নীরিহ মানুষের ওপর সৌদি আরব নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করছে। সাধারণ মানুষ হত্যার পাশাপাশি সৌদি আরব ইয়েমেনের অবকাঠামোগুলোও ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারী ও শিশুরা। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সহিংসতা ও উগ্রবাদ কোনো সীমান্ত মানে না এবং এদের ছোবল থেকে এ অঞ্চলের কোনো দেশই শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবেনা।
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত যেমনটি বলেছেন, উগ্র তাকফিরিদের বিপদজনক ও ভ্রান্ত চিন্তাভাবনা কেবল মধ্যপ্রাচ্য এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং তারা সারা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
সূত্র: আইআরআইবি, তারিখ: ১৭ অক্টোবর ২০১৫