বিনোদন প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত রাঙ্গুনিয়া কাপ্তাই পর্যটনকেন্দ্র
পোস্ট হয়েছে: মার্চ ২৭, ২০১৮
![news-image](https://www.iranmirrorbd.com/wp-content/uploads/2018/03/e76a09b5e88d5607eac8af22a1e0c166-59764ff816a1a.jpg)
সবুজ পাহাড় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর রূপসী কাপ্তাই ও শেখ রাসেল এভিয়ারী অ্যান্ড ইকোপার্ক। লুসাইকন্যা কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পিকনিক পর্যটন স্পট। প্রতিদিন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটনগুলোতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে যাচ্ছেন। বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে পর্যটনকেন্দ্র। নদী ও পাহাড়ের কোলে প্রিয়জনদের নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠছেন পর্যটকরা।
দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গত বছরের চেয়ে এ বছর পর্যটকদের আগমন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পিকনিক স্পট মালিকরা জানিয়েছেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শেষ সীমান্তে চন্দ্রঘোনা-হোছনাবাদ ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন কেন্দ্র শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকোপার্ক। সুবিশাল এলাকাজুড়ে মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হয়েছে। নানা জাতের পাখির কিচির মিচির শব্দে পার্ক এলাকা মুখরিত।
যুগল সেলিম ও সালমা জানান, পাহাড়বেষ্টিত কৃত্রিম হ্রদের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার ক্যাবল কার। ক্যাবল কারে চড়ে অনায়াসে প্রাকৃকিত সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন টুরিস্টরা। তবে ত্রুটি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্যাবল কার সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। ইকোপার্কের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে লোহার ব্রিজ বেয়ে কৃত্রিম দ্বীপের চারপাশের জলরাশি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
ফরিদপুর থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কের কয়েক কিলোমিটার পরেই চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পাশে কাপ্তাই ওয়াগ্গা বিজিবি ক্যাম্পের পাশে গড়ে উঠেছে প্যানোরমা ঝুম রেস্তোরাঁ। কর্ণফুলী নদীর তীরে সুবিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটনটি।
গৃহবধূ পারভীন আক্তার বলেন, গাছের উপর মাচাং। খুব সুন্দর দৃশ্য। অনায়াসে টুরিস্টরা সেখানে প্রিয়জনকে নিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন। পাহাড়ের কোলে বসার তোরণ সুব্যবস্থা রয়েছে। নদীর ধারে পাথরের ওপর প্রাকৃতিক দৃশ্য ক্যামরাবন্দী করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে আলাদা বিনোদন কেন্দ্র। রয়েছে স্পেশাল চা, কপি ও বিভিন্ন আইটেমের সুস্বাদু খাবার। প্রকৃতির সাথে একাকার হতে এটি সব চেয়ে নিরাপদ স্থান। দূর-দূরান্ত থেকে আসা টুরিস্টদের জন্য রয়েছে কটেজ ব্যবস্থা। বিনোদনপ্রেমীদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় রয়েছে বিজিবির নিজস্ব ফোর্স।
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটারজুড়ে কর্ণফুলী নদী প্রবহমান। পাহাড়-নদী মিলে মিশে মিতালি হয়েছে এক অপরূপ সৌন্দর্যের। রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা আইল্যান্ড খ্যাত চিরিংগা এলাকায় কর্ণফুলী নদীর মাঝে একটি আকর্ষণীয় দ্বীপ রয়েছে। এ দ্বীপকে কেন্দ্র করে একটি আধুনিকমানের পর্যটন কেন্দ্র করা সম্ভব। রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীর ধারে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে না উঠলেও কাপ্তাইয়ে অসংখ্য পর্যটন ও পিকনিক স্পট গড়ে উঠেছে।
কাপ্তাইয়ে প্যানোরমা ঝুম রেস্তোরাঁর পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ফ্লাইটিং পিকনিক স্পট, বনশ্রী পিকনিক স্পট, শিলছড়ি পাহাড়িকা পিকনিক স্পট, বালুরচর জাতীয় উদ্যান পিকনিক স্পট, বিএফআইডিসি পিকনিক স্পট, নৌবাহিনীর পিকনিক স্পট, জীবতলী আর্মি ক্যাম্প পিকনিক স্পট, কাপ্তাই আর্মি ক্যাম্প পরিচালিত বিনোদন কেন্দ্র, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে, কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্মিত মনোমুগ্ধকর বড়াদম ব্রিজ, চিৎমরম বৌদ্ধ মন্দির, ওয়া¹া চা এস্টেট, কর্ণফুলী হ্রদ, কাপ্তাই কার্গো পারাপার, কর্ণফুলী পেপার মিলসহ প্রায় ১৯টি পর্যটন স্পট ও কমপ্লেক্সের দর্শনীয় স্থানে পর্যটকরা অনায়াসে ভ্রমণ করছেন। – নয়াদিগন্ত।