ইরান ও ইসলামের মহান ব্যক্তিত্ব
পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
![news-image](https://www.iranmirrorbd.com/wp-content/uploads/2015/09/Mahbubur-Rahman.jpg)
এ. কে. এম. মাহবুবুর রহমান
ইরানে আম্বিয়ায়ে কেরাম
যেসব নবী ইরানে জন্মগ্রহণ করেছেন বা শুয়ে আছেন তাঁদের সংখ্যা অনেক। কয়েকজনের নাম নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :
১. হযরত ইবরাহীম (আ.)
২. হযরত ইসহাক (আ.)
৩. হযরত ইয়াকুব (আ.)
৪. হযরত শোআইব (আ.)
৫. হযরত শাম বিন নূহ (আ.)
৬. হযরত হাম বিন নূহ (আ.)
৭. হযরত রুবিল বিন ইয়াকুব (আ.)
৮. হযরত বেলাভী বিন ইয়াকুব (আ.)
৯. হযরত সালেহ (আ.)
১০. হযরত আইয়ুব (আ.)
১১. হযরত দানিয়াল (আ.)
১২. হযরত জুলকাফ্ল (আ.)
১৩. হযরত হায্কীল (আ.)
১৪. হযরত ইসমাইল বিন হায্কীল (আ.)
১৫. হযরত খেজের (আ.)
১৬. হযরত জারজীস (আ.)
১৭. হযরত হায়াকুক (আ.)
১৮. হযরত সালাম (আ.)
১৯. হযরত সালুম (আ.)
২০. হযরত সাহুলী (আ.)
২১. হযরত আলকিয়া (আ.)
২২. হযরত শামউন (আ.)
হযরত ইবরাহীম (আ.)
তিনি ততকালীন ব্যাবিলন বা বাবেলে জন্মগ্রহণ করেন। এই বাবেল বর্তমান ইরাক, ইরান ও তুরস্কের বিরাট অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল। হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। তবে ইবনে জারীর তাবারী লিখেন, কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে তাঁর জন্মস্থান ছিল আহওয়াজ এলাকার শুশে।
আহওয়াজ পশ্চিম ইরানের খুজিস্তান প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর। শুশ তারই একটু উত্তরে অবস্থিত। ইবনুল আসীর লিখেছেন : হযরত ইবরাহীম (আ.) আহওয়াজ এলাকার নিকটবর্তী শুশে জন্মগ্রহণ করেন।
হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর মাযার বর্তমানে ফিলিস্তিনের আল খলিল শহরে। ইসরাইলি বাহিনী এ পবিত্র মাযারের বিরাট অংশ উড়িয়ে দিয়েছে। তবে নমরুদ যে চরকা দিয়ে হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল তা এখনো তুরস্কে বিদ্যমান রয়েছে।
হযরত ইসহাক (আ.)
হযরত ইসহাক (আ.) হলেন হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর দ্বিতীয় পুত্র। অনেকের মতে তাঁর মাযার বাইতুল মোকাদ্দাসে অবস্থিত। তবে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর দেযফুলের পাশে অবস্থিত হযরত ইসহাক (আ.)-এর পবিত্র মাযার সম্পর্কে ‘তাজকিরাতুল আখইয়ার’ গ্রন্থে এরূপ লিপিবদ্ধ রয়েছে : এ অঞ্চলের পবিত্র স্থানের মধ্যে দেযফুল থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে রয়েছে হযরত ইসহাক বিন ইবরাহীম (আ.)-এর পবিত্র মাযার।
হযরত ইয়াকুব (আ.)
ইরানের শুশতার শহরের অদূরে দেযফুল নদীর পাড়ে রয়েছে হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর পবিত্র মাযার। তিনি ছিলেন হযরত ইসহাক (আ.)-এর দ্বিতীয় পুত্র। যাঁর অপর নাম ইসরাইল। এ নাম থেকেই বনি ইসরাইল বংশের উতপত্তি হয়।
হযরত শোআইব (আ.)
তাঁর মাযার শুশতার শহরের পার্শ্ববর্তী হুচ্ছামাবাদ এলাকায় অবস্থিত।
হযরত সাম বিন নূহ (আ.) এবং হযরত হাম বিন নূহ (আ.)
তাঁদের মাযার ইরানের সেমনান শহরের পাশে অবস্থিত। সে এলাকা বোকআয়ে দো’পয়গাম্বর হিসেবে প্রসিদ্ধ। হযরত নূহ (আ.)-এর মহাপ্লাবনের পর গোটা অঞ্চলের নবী ছিলেন এ দু’ভাই।
হযরত রুবিল (আ.)
তাঁর মাযার দেযফুল নদীর পাড়ে শুশতার শহরের অদূরে অবস্থিত। তিনি ছিলেন হযরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাই।
হযরত বেলাভী (আ.)
তাঁর মাযারও দেযফুল নদীর পাড়ে শুশতার শহরের অদূরে হযরত শামউন ও ইসহাক (আ.)-এর মাযারের পার্শ্বেই অবস্থিত।
হযরত সালেহ (আ.)
তাঁর পবিত্র মাযার শুশতার শহরে অবস্থিত। একটি ছোট টিলার ওপর এ মাযার রয়েছে। একটি মাটির ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোণে শুয়ে আছেন এ মহান পয়গাম্বর।
হযরত আইয়ুব (আ.)
দীর্ঘ আঠারো বছর পর্যন্ত অসুস্থ থাকার পর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে আরোগ্য দান করেন। তাঁর ও তাঁর স্ত্রী বিবি রহিমার পবিত্র মাযার ইরানের শিরাজের অদূরে একটি পল্লিতে অবস্থিত। তবে আল্লাহ তাআলার নির্দেশে যে কূপে গোসল করে তিনি আরোগ্য লাভ করেন সে কূপটি এখনো তুরস্কে রয়েছে। এখনো হাজার হাজার মানুষ রোগমুক্তির জন্য সেখানে গোসল করতে যায়।
হযরত দানিয়াল (আ.)
তাঁর জন্ম বাইতুল মোকাদ্দাসে। তাঁর মাযার রয়েছে পশ্চিম ইরানের শুশ দানিয়াল শহরে।
হযরত জুলকাফ্ল
জুলকাফ্ল ও হযরত হাযকীল (আ.) একই ব্যক্তি না দু’ব্যক্তি এ নিয়ে মতভেদ আছে। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক মতে কুরআনে বর্ণিত জুলকাফ্ল আর ইতিহাসের হাযকীল একই ব্যক্তি। ‘জুলকাফ্ল’ অর্থ ‘জামিনদার’। আর ‘হাযকীল’ অর্থ ‘আল্লাহ কর্তৃক শক্তিপ্রাপ্ত’। তাঁর মাযার সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। তবে কোন কোন বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, ইরানের দেযফুলের পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে তাঁর মাযার রয়েছে।
হযরত ইসমাইল বিন হাযকীল (আ.)
তিনিও বনি ইসরাইলের নবী ছিলেন। যখন বখতে নাসর বাইতুল মোকাদ্দাসে আক্রমণ করে তখন হযরত ইসমাইলের পিতা ইরানের শুশতারে আগমন করেন। সে সময় হযরত ইসমাইল (আ.) জন্মগ্রহণ করেন।
হযরত খেজের (আ.)
ইরানের শুশতারে জন্মগ্রহণ করেন। এখানো তাঁর স্মৃতিকে স্মরণ করার জন্য শুশতার-আহওয়াজ সড়কের পাশে একটি গম্বুজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
হযরত হায়াকুক (আ.)
হযরত দানিয়াল (আ.)-এর সমসাময়িক। ইরানের হামাদান প্রদেশের তুসেরকান শহরে তাঁর মাযার অবস্থিত।
হযরত সালাম, সালুম, সাহুলী ও আলকিয়া (আ.)
তাঁরা ছিলেন বনি ইসরাইলের নবী। তাঁদের চারজনের মাযার ইরানের কাযভীন শহরে একই স্থানে অবস্থিত।
হযরত শামউন (আ.)
তিনি ছিলেন হযরত হাযকীলের সময়কার নবী। শুশতারে তাঁর মাযার অবস্থিত।
ইমাম, আরেফ ও অলিগণ
১. হযরত আলী ইবনে মূসা আর রেযা (আ.)
তিনি ছিলেন হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর বংশধর। তিনি খলিফা মামুনুর রশিদের আমলে মুসলিম উম্মাহর ইমামতের দায়িত্ব পালন করেন। ইরানের খোরাসান প্রদেশের মাশহাদ শহরে তাঁর মাযার অবস্থিত।
২. হযরত ওয়াইস আল-কারনী (রা.)
তিনি ছিলেন ইয়েমেনের লোক। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় বাখতারান-সানান্দাজ সড়কের অদূরে একটি টিলার ওপরে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩. হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহ.)
ইরানের সেমনান প্রদেশের শাহরোদ থেকে অল্প দূরে বোস্তাম (বাস্তাম) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জীবনের প্রায় ত্রিশ বছর সফরে অতিবাহিত করেন। ধারণা করা হয় যে, এ সফরে তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থিত মাযার সেই স্মৃতি বহন করছে। তবে তিনি শেষ জীবনে নিজ জন্মভূমি বোস্তামে ফিরে যান। ২৬১ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। বোস্তাম শহরে এখনো হাজার হাজার লোক তাঁর মাযার যিয়ারত করে থাকেন।
৪. হযরত ফুজাইল বিন আয়াজ (রহ.)
ইরানের মারভে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৭ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৫. হযরত সাহল বিন আবদুল্লাহ তাসতরী (রহ.)
ইরানের শুশতারে জন্মগ্রহণ করেন। ২৮৭ হিজরি মতান্তরে ২৯৩ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৬. হযরত হোসাইন বিন মানসুর হাল্লাজ (রহ.)
ইরানের র্ফাস প্রদেশের অন্তর্গত বায়জা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ফানাফিল্লাহর সর্বোচ্চ মাকামে পৌঁছে ‘আনাল হক’ (আমিই খোদা)- এ কথা বলায় ৩০৬ হিজরিতে তাঁকে ফাঁসি দেয়া হয়।
৭. হযরত আবু বকর শিবলী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের খোরাসানের লোক। তবে বাগদাদেই তাঁর জীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ৩৩৪ থেকে ৩৪৪ হিজরির মধ্যবর্তী সময়ে ইন্তেকাল করেন।
৮. হযরত আবু আলী রোদবারী
ইরানের মাযানদারান প্রদেশের রোদবার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ৩২২ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৯. হযরত আবু নাস্র সিরাজ তূসী (রহ.)
তিনি ইরানের তূসে জন্মগ্রহণ করেন। মাশহাদ শহরের অদূরে পীরে পালান্দোজ নামে খ্যাত তাঁর মাযার রয়েছে। তিনি ৩৭৮ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
১০. হযরত আবুল ফজল সারাখ্সী (রহ.)
তিনি খোরাসানের অধিবাসী ছিলেন। তিনি ছিলেন আবু নাস্র সিরাজীর মুরীদ এবং বিশ্ববিখ্যাত আরেফ আবু সাঈদ আবুল খায়ের (রহ.)-এর শিক্ষক। ৪০০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
১১. আবু তালিব মাক্কী (রহ.)
তিনি ইরানের জাবাল শহরের লোক ছিলেন। বহু বছর মক্কায় অবস্থান করায় মাক্কী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তাঁর বিরচিত ‘কুউওয়াতুল কুলূব’ অধ্যাত্মিক জগতের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে প্রসিদ্ধ। তিনি ৩৮৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
১২. শেখ আবুল হাসান খারাকানী (রহ.)
তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত অলি। ইরানের সেমনান প্রদেশের শাহরোদ শহরের অদূরে খারাকান নামক স্থানে তাঁর জন্ম এবং সেই শহরেই তাঁর পবিত্র মাযার অবস্থিত। বিশ্ববিখ্যাত আলেম দুনিয়ার প্রথম শাইখুল ইসলাম হযরত খাজা আবদুল্লাহ আনসারী (রহ.) এবং বিজ্ঞানী ইবনে সীনা (রহ.) ছিলেন তাঁর মুরীদ। ৪২৫ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
১৩. হযরত আবু সাঈদ আবুল খায়ের নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন নিশাপুরের অধিবাসী। এ বিশ্ববিখ্যাত অলি ৪৪০ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
১৪. ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মাদ গাজ্জালী তূসী (রহ.)
খোরাসান প্রদেশের তূস নগরে জন্মগ্রহণ করেন। ৫০৫ হিজরি সনে তিনি তূসে ইন্তেকাল করেন। তূস নগরীতে তাঁর মাযার অবস্থিত।
১৫. হযরত আহমদ গাজ্জালী (রহ.)
তিনি ছিলেন উঁচু পর্যায়ের অলি। তিনি ছিলেন হযরত ইমাম গাজ্জালীর ভাই। তাঁর চেষ্টাতেই ইমাম গাজ্জালী মহাসত্যের সন্ধান পেয়ে ‘এহইয়ায়ে উলুমিদ্দীন’ গ্রন্থ রচনা করেন। ইরানের কাজবীন শহরের আহমদিয়া মসজিদের পাশেই তাঁর মাযার রয়েছে।
১৬. হযরত আইনুল কোজাত হামেদানী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের হামেদান প্রদেশের লোক। তিনি ছিলেন হযরত আহমদ গাজ্জালী (রহ.)-এর মুরীদ। আল্লাহপ্রেমে মগ্ন হয়ে বাহ্যিকভাবে শরীয়তের বরখেলাফ কথা বলায় ৫২৫ হিজরিতে তাঁকে হত্যা করে তাঁর পবিত্র শরীর জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
১৭. হযরত আহমদ জামী যিন্দেপীল (রহ.)
তিনি ছিলেন তুরবতে জামের অধিবাসী। ইরানের আফগান সীমান্তবর্তী তুরবতে জামেতে এ মহান অলির পবিত্র মাযার অবস্থিত। তিনি ৫৩৬ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
১৮. হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)
ইরানের গিলান প্রদেশের রাশ্ত শহরের অদূরে সূমে সারা নামক অঞ্চলে ৪৭০ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। ঐ শহরে তাঁর মহীয়সী মাতা উম্মুল খায়ের ফাতেমা (রহ.)-এর মাযার রয়েছে। তিনি সে এলাকায় ‘সাইয়্যেদা নেসা’ হিসেবে পরিচিত। বড় পীর (রহ.) ৫৬১ হিজরিতে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন। বাগদাদে তাঁর মাযার অবস্থিত।
১৯. হযরত শেখ নাজমুদ্দিন কোবরা (রহ.)
তিনি ইরানের খোরাসান প্রদেশের খারযেম শহরের অধিবাসী ছিলেন। হালাকু খান যখন মুসলিম সভ্যতার কেন্দ্র ধ্বংস করছিল তখন তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখে এ মর্মে সংবাদ পাঠাল যে, শেখ আপনি এলাকা ছেড়ে বাইরে চলে যান। তিনি উত্তর দিলেন- ‘আমি সুখের দিনগুলোতে জনগণের পাশে ছিলাম আর এ বিপদের দিনে তাদেরকে ছেড়ে যেতে পারব না।’
এ কথা বলে বীর বেশে জেহাদের পোশাক পরিধান করে জেহাদ করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে ৬১৬ হিজরিতে শাহাদাত বরণ করেন।
২০. শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত আরেফ কবি। তিনি খোরাসান প্রদেশের নিশাপুরের অধিবাসী ছিলেন। তিনি কত বড় আল্লাহর অলি ছিলেন তা বিশ্ববিখ্যাত আরেফ মাওলানা রুমী (রহ.)-এর একটি শ্লোক হতে সহজেই অনুমেয়।
هفت شهر عشق را عطار گشت
ما هنوز اندر خم یک کوچه ایم
‘আত্তার এশকের ৭টি শহরে পরিভ্রমণ করেছেন, কিন্তু আমরা এখনো (ঐ শহরের) একটি গলিতে দাঁড়িয়ে আছি।’
৬২৬ হিজরিতে তিনি মঙ্গলদের হাতে শাহাদাত বরণ করেন।
২১. শেখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের জানজানের অধিবাসী। তিনি ছিলেন বড় পীর (রহ.)-এর মুরীদ। আর তাঁর মুরীদ ছিলেন শেখ সাদী (রহ.)। ৬৩২ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর রচিত ‘আওয়ারেফুল মাআরেফ’ আধ্যাত্মিক জগতে একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত।
২২. মাওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মাদ বাল্খী রুমী (রহ.)
তিনি তৎকালীন ইরানের খোরাসানের বাল্খে ৬০৪ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে এ স্থানটি রাশিয়ায় অবস্থিত। তিনি ছিলেন শেখ শাম্সে তাবরিযী (রহ.)-এর মুরীদ। তাঁর অমর কাব্য ‘মসনবী’ শরীফ। ৬৭২ হিজরিতে তিনি বর্তমান তুরস্কের কৌনিয়া শহরে ইন্তেকাল করেন। এখনো সেখানে তাঁর মাযার রয়েছে।
২৩. হযরত আলাউদ্দৌলা সেমনানী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের সেমনানের অধিবাসী। তাঁর রচিত ‘আল উরওয়াতুল লি আহলিল খালওয়াতি ওয়াল জালওয়াহ’ একটি বিশ্ববিখ্যাত আধ্যাত্মিক গ্রন্থ। তিনি ৭৩৪ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। সেমনানে তাঁর মাযার অবস্থিত।
২৪. হযরত আবদুর রাযযাক কাশানী
তিনি ছিলেন ইরানের কাশানের অধিবাসী। তিনি হযরত ইবনুল আরাবী (রহ.)-এর ‘ফুসুলুল হিকাম’ ও খাজা আবদুল্লাহ আনসারী (রহ.)-এর ‘মানাযিলুস সায়েরীন’ গ্রন্থের ব্যাখ্যা লিখেন। তিনি ৭৩৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
২৫. হযরত খাজা হাফেয শিরাজী (রহ.)
তিনি বিশ্ববিখ্যাত আরেফ কবি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তাঁর ‘দিওয়ানে হাফেয’ বিশ্ব সাহিত্যের অমর নিদর্শন হিসেবে সমাদৃত। হাফেয ৭৯১ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। ইরানের শিরাজ নগরে তাঁর মাযার অবস্থিত।
২৬. শাহ নেয়ামত উল্লাহ অলি (রহ.)
তিনি আলেপ্পোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কেরমানের অধিবাসী। বিশ্ববিখ্যাত অলিদের তালিকায় তাঁর নাম শীর্ষভাগে রয়েছে। ৮২০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইরানে কেরমান প্রদেশের মাহানে তাঁর মাযার অবস্থিত।
২৭. শামসুদ্দিন মুহাম্মাদ লাহিজী নূর বাখ্শী (রহ.)
তিনি ছিলেন শিরাজের অধিবাসী। তিনি মাহমুদ শবাস্তরীর ‘গুলশানে রায়’ এর ব্যাখ্যা লিখেন। নবম হিজরি শতকের শেষ দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন।
২৮. নুরুদ্দিন আবদুর রহমান জামী (রহ.)
তিনি ইরানের খোরাসান প্রদেশের তুরবতে জাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং আহমদ জাম যিন্দেপীল (রহ.)-এর মুরীদ ছিলেন। এজন্য তিনি জামী হিসেবে প্রসিদ্ধ। তিনি ৮৯৮ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
২৯. ইয়াহইয়া মায়াজ রাযী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের রেই শহরের অধিবাসী। শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার (রহ.) তাঁকে প্রথম শ্রেণির অলি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিশাপুরে মা’মার গোরস্তানে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩০. হযরত তাহের বিন যায়নুল আবেদীন (রহ.)
তিনি ছিলেন হযরত ইমাম বাকেরের ভাই। ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণ পার্শ্বস্থ শাহ আবদুল আযীমে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩১. হযরত বাবা তাহের উরইয়ান (রহ.)
তিনি ছিলেন হামেদানের অধিবাসী। হামেদানের উপকণ্ঠে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩২. শেখ আলাউদ্দিন (রহ.)
তিনি ছিলেন আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর নানার পিতা। তাঁর মাযার তেহরানের মৌলভী নামক স্থানে অবস্থিত।
৩৩. শাহ চেরাগ (রহ.)
তিনি ছিলেন হযরত ইমাম রেযা (আ.)-এর ভাই। তাঁর মাযার ইরানের শিরাজে অবস্থিত।
৩৪. শেখ সাদী (রহ.)
তিনি ছিলেন আরেফ কবি। তাঁর বিশ্ববিখ্যাত ‘গুলিস্তান’ গ্রন্থ বিশ্ব সাহিত্যে অমর কীর্তি হিসেবে সমাদৃত। ইরানের শিরাজ নগরীতে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩৫. শেখ আহমদ নাজ্জার আস্তারাবাদী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসানের আস্তারাবাদ এলাকার বাসিন্দা।
৩৬. শেখ আবু যোরআ আরদাবেলী (রহ.)
তিনি আরদাবেল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ৪১৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। ইরানের শিরাজে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৩৭. খাজা ইউসুফ হামেদানী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের হামেদানের বাসিন্দা। শেখ মহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
৩৮. শেখ হাসান সাককাক সেমনানী (রহ.)
তিনি সেমনানের অধিবাসী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন উঁচু স্তরের অলি।
৩৯. শেখ জিয়াউদ্দিন আবুন্নাজিব আবদুল কাহের সোহরাওয়ার্দী (রহ.)
তিনি ছিলেন বিখ্যাত অলি। তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘আদাবুল মুরীদিন’ আধ্যাত্মিক জগতের মশালস্বরূপ। ৫৩৬ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৪০. শেখ নাজিমুদ্দিন রাযী (রহ.)
তিনি ইরানের রেই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৫৪ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। বাগদাদে শেখ জুনাইদ বাগদাদী (রহ.)-এর মাযারের পাশেই তাঁর মাযার অবস্থিত।
৪১. শেখ আবু আবদুল্লাহ আসসাওমেয়ী (রহ.)
তিনি ছিলেন গিলান প্রদেশের সুমেসারা অঞ্চলের অধিবাসী। তিনি ছিলেন আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর নানা।
৪২. খাজা কুতুবুদ্দিন ইয়াহইয়া জামী নিশাপুরী
তিনি নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ৭৪০ হিজরির ২১ জমাদিউল আখেরে তিনি ইন্তেকাল করেন। আফগানিস্তানের হেরাতের ফিরোজাবাদ গেটে তাঁর মাযার অবস্থিত।
৪৩. শেখ আওহাদ উদ্দীন হামেদ কেরমানী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের কেরমানের অধিবাসী। তিনি আরেফ কবি হিসেবে প্রসিদ্ধ।
৪৪. হযরত ইবরাহীম আদহাম (রহ.)
তিনি ছিলেন বালখের বাদশাহ। বাল্খ ছিল ততকালীন ইরানের খোরাসান এলাকারই একটি অংশ। তিনি ১৬১ হিজরিতে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন এবং বাগদাদের চোকাইন কিল্লায় তাঁর মাযার অবস্থিত।
৪৫. হযরত আবুল কাসেম কোশাইরী (রহ.)
তিনি ছিলেন নিশাপুরের অধিবাসী। তিনি ৩৭৬ হিজরিতে নিশাপুরে ইন্তেকাল করেন। তাঁর ‘রেসালায়ে কুশাইরিয়া’ আধ্যাত্মিক জগতের অনন্য গ্রন্থ হিসেবে প্রসিদ্ধ।
৪৬. হযরত আবু আবদুল্লাহ দাস্তানী (রহ.)
‘শাইখুল মাশায়েখ’ হিসেবে প্রসিদ্ধ। তিনি ছিলেন খোরাসানের অধিবাসী। ৪১৭ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৪৭. হযরত আবু আবদুর রহমান সালামী (রহ.)
তিনি ৩২৫ হিজরির ১০ জমাদিউল আখের নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ৪১২ হিজরির ৩ শাবান নিশাপুরেই ইন্তেকাল করেন। তাঁর রচিত ‘তাবাকাতুস সুফিয়া ওয়া তারিখুস সুফিয়া’ একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ।
৪৮. হযরত খাজা আবদুল্লাহ আনসারী (রহ.)
তিনি ছিলেন দুনিয়ার সর্বপ্রথম শাইখুল ইসলাম। তিনি ৩১৬ হিজরি মতান্তরে ৩৯৫ হিজরির ২ শাবান জন্মগ্রহণ করেন। ৪৮১ হিজরির যিলহজ মাসে তিনি আফগানিস্তানের হেরাতে ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন হযরত আবু আইউব আনসারী (রা.)-এর বংশধর। ‘পীরে হেরাত’ নামে তিনি খ্যাত। তাঁর রচিত ‘মানাযিলুস সায়েরীন’ এবং ‘তাফসীরে কাশফুল আসরার’ আধ্যাত্মিক জগতের অনন্য গ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত। তিনি ছিলেন হযরত আবুল হাসান খারাকানী (রহ.)-এর মুরিদ।
৪৯. হযরত মুহাম্মাদ বিন কেরাম (রহ.)
তিনি ছিলেন সুলতান মাহমুদ গজনভীর সময়ের সিসতানের অধিবাসী। কিছুদিন আহমাদ বিন হার্ব (১৭৬-২৩৪ হি.) এর কাছে প্রশিক্ষণ লাভের পর নিশাপুরে গমন করেন। ফিলিস্তিনের জেহাদে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে তিনি মুরিদদের বিরাট বাহিনী নিয়ে জেরুজালেম গমন করেন। ২৫৫ হিজরিতে সেখানেই ইন্তেকাল করেন।
তাঁর রচিত ‘আযাবুল কাব্র’ গ্রন্থখানি গবেষকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করেছে।
৫০. হযরত হাকিম তিরমিযী (রহ.)
তিনি খোরাসানের তিরমিয এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ২৮৫ হিজরিতে মতান্তরে ২৯৬ হিজরিতে তিনি তিরমিযেই ইন্তেকাল করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘খাতামুল বেলায়াতে ওয়া এলালুশ শারায়ে’ ততকালে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
৫১. হযরত আবুল হাসান আল-হাজবিরী (রহ.)
তিনি ‘দাতা গাঞ্জে বাখ্স’ হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি ছিলেন গজনীর হাজবীরের অধিবাসী। ৪৫৬ হিজরিতে লাহোরে (পাকিস্তান) ইন্তেকাল করেন। লাহোরেই তাঁর মাযার অবস্থিত। তাঁর রচিত ‘কাশফুল মাহজুব’ বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত।
৫২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মোবারক (রহ.)
তিনি ছিলেন ততকালীন খোরাসানের মার্ভের অধিবাসী। তিনি যেমন ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের ফকিহ ও মুহাদ্দিস তেমনই ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের একজন অলি। জীবনের বেশিরভাগ সময়ই বাগদাদ ও মক্কা মোকাররমায় কাটিয়েছেন। তাঁর জীবনপদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে : ‘এক বছর হজ করতেন, এক বছর বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ ও এক বছর ব্যবসা করতেন। আর নিজের (ব্যবসালব্ধ) আয় তাঁর অনুসারীদের মাঝে বণ্টন করতেন।’ ১৮১ হিজরিতে ইরাক ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী ‘হেইত’ নামক স্থানে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৫৩. হযরত আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন খাফিফ বিন ইসফাকশাদ আদ্দাবরী (রহ.)
২৬৮ হিজরিতে ইরানের শিরাজে জন্মগ্রহণ করেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় জীবনের ত্রিশ বছর তাঁকে কারাগারে থাকতে হয়। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আলেমে রাব্বানী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।
এ মহান ব্যক্তির প্রতিষ্ঠিত পন্থাকে তরীকায়ে খাফিফিয়া বলা হয়। তিনি পঁচিশটিরও অধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে ‘শারফুল ফোকারা’, ‘আওসাফুল কুলুব’, ‘কিতাবুল একতেসাদ’ সমধিক প্রসিদ্ধ। তিনি ৩৭১ হিজরির ২৩ রমযান ইরানের শিরাজে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মাযারে অসংখ্য লোকের সমাগম হয়ে থাকে।
৫৪. হযরত আবু আলী শাকীক বিন ইবরাহীম বাল্খী (রহ.)
তিনি ছিলেন ততকালীন খোরাসান প্রদেশের বাল্খের অধিবাসী। ১৭৪ হিজরিতে বাল্খের খাতলাল অঞ্চলে শাহাদাত বরণ করেন। খাতলাল শহরে এখনো তাঁর মাযার বিদ্যমান।
৫৫. হযরত দাউদ বাল্খী (রহ.)
তিনি ছিলেন বাল্খের অধিবাসী। ১৭৪ হিজরিতে বাল্খেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
৫৬. হযরত খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতী আজমিরী (রহ.)
তিনি ইরানের সিসতান প্রদেশের সিন্জ নামক শহরে ৫৩৬ হিজরির ৬ রজব জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩৩ হিজরির ৬ রজব ভারতের আজমীরে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি ‘খাজায়ে হিন্দ’, ‘খাজা গরীব নওয়াজ’ হিসেবে প্রসিদ্ধ। তিনি ছিলেন চিশতীয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা।
৫৭. হযরত আবু নাস্র শিরাজ তূসী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের খোরাসান প্রদেশের তূসের অধিবাসী। তিনি ‘তাউসুল ফোকারা’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ৭৮ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৫৮. হযরত আবু নাস্র বেশর বিন আল-হারেস আবুদর রহমান হাফি (রহ.)
তিনি তৎকালীন খোরাসানের মার্ভ অঞ্চলের অধিবাসী। ২২৭ হিজরির ১০ই মুহররম তিনি বাগদাদে ইন্তেকাল করেন।
৫৯. হযরত আবুল হাসান আহমদ বিন মুহাম্মাদ নূরী (রহ.)
তাঁর পূর্বপুরুষগণ ছিলেন খোরাসানের লোক। তাঁর পিতা খোরাসান থেকে বাগদাদে হিজরত করেন। তিনি ছিলেন নূরিয়া তরীকার প্রতিষ্ঠাতা। ২৮৮ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৬০. হযরত আবু ইসহাক নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের নিশাপুরের অধিবাসী। ২৬৯ হিজরিতে তিনি নিশাপুরেই ইন্তেকাল করেন।
৬১. আবু বকর মুহাম্মাদ বিন মূসা ওয়াসেতী খোরাসানী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসানের অধিবাসী। তিনি ৩২০ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৬২. আবুল কাসেম ইবরাহীম বিন মুহাম্মাদ নাস্রবাদী (রহ.)
তিনি ছিলেন নিশাপুরের নাস্রাবাদ এলাকার অধিবাসী। তাঁকে ‘শেইখে খোরাসান’ বলা হতো। তিনি ৩৬৯ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৬৩. হযরত আবু আলী হাসান বিন দাককাক নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ৪০৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৬৪. হযরত হাফেজ আবু নাঈম ইসফাহানী (রহ.)
তিনি ইসফাহানের লোক। ৪৩০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর রচিত ‘হুলইয়াতুল আউলিয়া’ গ্রন্থখানিতে তিনি ৪র্থ হিজরি শতকের পূর্বেকার ৬৮৯ জন বিশ্ববিখ্যাত অলির জীবনী তুলে ধরেছেন।
৬৫. হযরত সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ রাযাভী (রহ.)
তিনি ইরানের নিশাবুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হাজী বোকতাশ অলি হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তিনি ছিলেন বোকতাশিয়া তরীকার প্রতিষ্ঠাতা। ৭৩০, মতান্তরে ৭৩৮ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৬৬. হযরত জামাল উদ্দিন আরসিস্তানী (রহ.)
তিনি ইরানের ইসফাহান প্রদেশের আরদিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ‘কাশফুল আরওয়াহ’, ‘রুহুল কুদ্স’, ‘মিশকাতুল মুহিব্বীন’ সহ বহু মূল্যবান গ্রন্থের রচয়িতা। ৮৭৯ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন জামালিয়া তরীকার প্রতিষ্ঠাতা।
৬৭. হযরত শামসুদ্দিন মুহাম্মাদ বিন মালেকদাদ তাবরিযী (রহ.)
তিনি ‘শামছে তাবরিযী’ হিসাবে খ্যাত। মাওলানা রুমী তাঁর সান্নিধ্যে থেকে আধ্যাত্মিকতা অর্জন করেন। তিনি ৬৪৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৬৮. হযরত মুহাম্মাদ মাসুম শিরাজী (রহ.)
তিনি ছিলেন শিরাজের অধিবাসী। এছাড়া তিনি ছিলেন মাসুম আলী শাহ তরীকার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর উপাধি ছিল ‘নায়েবুস সাদ্র’। তাঁর রচিত বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ‘তারায়েকুল হাকায়েক’ আধ্যাত্মিক জগতের এক অমূল্য গ্রন্থ।
৬৯. হযরত আবু আবদুর রহমান হাতেম বিন হালওয়ান আসাম বাল্খী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসান প্রদেশের বাল্খের অধিবাসী। ২৩৭ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭০. হযরত আবু আহমদ বিন খাজরোবী বাল্খী (রহ.)
তিনি ছিলেন বাল্খের লোক। ২৭০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭১. হযরত আবু মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ মারতাআশ নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের নিশাপুরের অধিবাসী। ৩২৮ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭২. হযরত আবু ওমর মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম যুজাজী (রহ.)
তিনি ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের অলি। ৩৪৮ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭৪. হযরত আবু মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান রাযী শারানী নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের নিশাপুরের অধিবাসী। ৩৫৩ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭৫. হযরত আবু আহমদ আবদাল চিশতী (রহ.)
তিনি ইরানের সিসতান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৩৫০ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৭৬. হযরত আবু ইসহাক ইবরাহীম কাযরুনী (রহ.)
তিনি ইরানের ফার্স প্রদেশের কাযরুনে জন্মগ্রহণ করেন। ৪২৫ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭৭. হযরত আবু আবদুল্লাহ শিরাজী বাবাকুহী (রহ.)
তিনি ছিলেন শিরাজের লোক। তিনি ‘বাবাকুহী’ হিসেবে প্রসিদ্ধ। শিরাজের একটি পাহাড়ের ওপর তাঁর মাযার। ৪২ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭৮. হযরত আবু বকর নাসসাজ তূসী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসান প্রদেশের তূস শহরের অধিবাসী। ৪৮৭ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৭৯. হযরত আবুল মাজ্দ মাজদুদ বিন আদম সানায়ী গজনভী (রহ.)
তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত আরেফ কবি। ৫৩৫ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৮০. সাইয়্যেদ বোরহান উদ্দিন মুহাক্কেক তিরমিযী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসান প্রদেশের তিরমিয নামক স্থানের অধিবাসী। তিনি ৬৩৮ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৮১. হযরত সা’দ উদ্দিন হামাভী (রহ.)
তিনি ছিলেন খোরাসানের অধিবাসী। ৬৫০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৮২. হযরত আমীর সাইয়্যেদ আলী বিন শিহাবুদ্দিন হামেদানী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের হামেদান প্রদেশের অধিবাসী। ৭৮৪ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৮৩. হযরত আবু সালেহ হামদুন বিন আহমদ বিন আম্মারেহ কাসসার নিশাপুরী (রহ.)
তিনি ছিলেন কাসসারিয়া তরীকার প্রতিষ্ঠাতা। ২৭১ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৮৪. হযরত আবুল আব্বাস কাসেম বিন আবিল কাসেম বিন আবদুল্লাহ বিন আল-মাহদী (রহ.)
তিনি ছিলেন ইরানের ততকালীন খোরাসানের মার্ভ নামক স্থানের অধিবাসী। তিনি ছিলেন সাইয়ারিয়া তরীকার প্রতিষ্ঠাতা। ৩৪২ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
(অসমাপ্ত)